আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি? ভালো না খারাপ? বিশেষজ্ঞদের মতামত জানুন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এখন প্রযুক্তির বিশ্বে এক বিস্ময়কর আবিষ্কার। এআই এমন একটি প্রযুক্তি যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে কম্পিউটারের মাধ্যমে অনুকরণ করে। আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে জটিল চিকিৎসা সমস্যা সমাধান করা পর্যন্ত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ, দ্রুত এবং আরও কার্যকরী করে তুলছে।

তবে, এর উন্নতির সাথে সাথে বিভিন্ন প্রশ্নও উঠছে এআই কি আমাদের জন্য ভালো না খারাপ? এর বিভিন্ন প্রভাবগুলি কি আমাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে নাকি বিপর্যয় সৃষ্টি করবে? এই ব্লগ পোস্টে আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী ? বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ভাল মন্দ দিকগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) হলো কম্পিউটার সিস্টেম যা মানুষের মত চিন্তা করতে পারে, শিখতে পারে এবং সমস্যা সমাধান করতে পারে। সহজ কথায় মানুষের চিন্তা ভাবনাকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটারের মধ্যে রুপ দেওয়াকে বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমাত্রা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI)।

কম্পিটারের নিজস্ব কোন বুদ্ধি নাই। অর্থ্যাৎ নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। কিন্তু ওই কাজের সমাধান কম্পিটারে ডুকিয়ে দিলে কিম্পউটার অতি সহজেই করতে পারে।

অন্যভাবে বলা যায়, এআই এমন একটি প্রযুক্তি যা মানুষের বুদ্ধিমত্তার কিছু দিক অনুকরণ করে। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যেমন স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালানো, ভাষা অনুবাদ, ব্যক্তিগত সহকারী (যেমন গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট), স্বাস্থ্যসেবা, এবং আরও অনেক কিছু।

ওয়ালটন ফ্রিজ 10 সেফটি দাম ২০২৪

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ভালো দিক

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই এর বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে যা আমাদের জীবনকে সহজতর ও উন্নত করতে পারে। চলুন সেগুলো দেখে নেই।

১. স্বাস্থ্যসেবা: Al মাধ্যমে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এটি দ্রুত এবং সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে পারে, যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে জন্য একটি বড় অগ্রগতি ঘটাবে।

২. উৎপাদন বাড়াতে: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। যা সময় এবং খরচ দুটিই বাঁচায়। উদাহরণস্বরূপ – উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং মানুষের বিভিন্ন সমস্যা কমাতে রোবোটিক্স এবং অটোমেশন ব্যবহার করা হচ্ছে।

৩. অভিজ্ঞতা: আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকে সহজতর করে তুলছে কৃত্রিম বদ্ধিমাত্রা। যেমন- গুগল ম্যাপস আমাদের ট্রাফিক আপডেট দেয়, গাড়ি চালানো নির্দেশনা দেয় এবং বিভিন্ন ডিভাইসের ত্রুটি সম্পর্কে বলে দেয়।

৪. পরিবেশ সংরক্ষণ: জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি পরিবেশের তথ্য বিচার বিশ্লেষণ করে এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর খারাপ দিক

সাধারণত যে কোন জিনিসের ভালো দিক থাকলে তার মন্দ দিকও থাকে। যদিও এআই এর অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তবুও এর কিছু খারাপ দিকও আছে। চলুন এবার জেনে নেই এর খারাপ দিক গুলো।

১. চাকরি হারানোর ভয়: অনেক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে এআই এর উন্নতির ফলে অধিকাংশ মানুষের চাকরি হারিয়ে যাবে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মানুষের কাজের প্রয়োজনীয়তা কমতে থাকবে। ফলে অনেক মানুষের কর্মস্থান হারানোর ভয় থাকবে।

২. নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা: প্রযুক্তির মাধ্যমেই বিশাল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়। যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য হুমকি হতে পারে। এছাড়াও, সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। ফলে নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা বলে কিছুই থাকবে না।

৩. নৈতিকতা ও নিয়ন্ত্রণ: আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার নিয়ে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রগুলোর ব্যবহার কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে এবং কোন পরিস্থিতিতে এআই ব্যবহার করা উচিত তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ফলে মানুষের মধ্যে নৈতিকাত নিয়ন্ত্রন নিয়ে আশঙ্কা থেকে যাই।

কোপা আমেরিকা কে কতবার জিতেছে ২০২৪

AI নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত

এআই সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা মিশ্র মতামত প্রদান করেছেন। কেউ কেউ মনে করেন যে, সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এআই মানুষের জীবনে অমূল্য অবদান রাখতে পারে। অপরদিকে, অনেকে মনে করেন যে, এআই এর অপব্যবহার বা অযাচিত উন্নতি আমাদের সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এআই বিষয়ে যেসকল মানুষ ভালো সাইট বেছে নিবে তাদের জন্য খুবই ভালো। এবং যারা খারাপ সাইট বেছে নিবে তাদের জন্য খুবই খারাপ।

সর্বশেষ কিছু কথা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি ভালো না খারাপ? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। এর অনেকাংশে নির্ভর করে আমরা কিভাবে এআই ব্যবহার করছি। আমাদের উচিত এআই এর ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা। সে সকলদিক বিবেচনা করে এর ব্যবহার নিশ্চিত করা।

এআই এর মাধ্যমে আমরা যদি সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারি তবে এটি আমাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। কিন্তু যদি আমরা এর অপব্যবহার করি। তবে এটি আমাদের সমাজের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর উন্নয়ন এবং ব্যবহার সম্পর্কে আমাদের সাবধান হওয়া উচিত।

 

খেলাটুডের সকল প্রকার আপডেট পেতে Follow করুন খেলাটুডে গুগল নিউজখেলাটুডে ফেসবুক পেজ